শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন
এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক:
পবিত্র কোরান মজিদে সুরা নিসা নাজিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত উত্তরাধিকার কেবলমাত্র পুরুষ আত্মীয় ও জ্ঞাতিবর্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে সুরা আল নিসা নাজিল হওয়ার পর মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের সূচনা ঘটে। পরবর্তীতে অবশ্য হযরত আবু হানিফ (রা), হযরত আবু ইউসুফ (রা), হযরত ইমাম মোহাম্মদ (রা) এবং হযরত শোবইয়া (রা) তাদের সুচিন্তিত মতবাদের মাধ্যমে দূরবর্তী জ্ঞাতিবর্গের এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদের উত্তরাধিকারত্বের ক্ষেত্রে সুচিন্তিত মতামত পোষণ করেন।
উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা বঞ্চিত ব্যক্তিগণ হচ্ছে, ক) ক্রীতদাস খ) হত্যাকারী গ) ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ঘ) আঞ্চলিকভাবে বঞ্চিত ব্যক্তি বা সমাজ। এ সকল ক্ষেত্রে পুং লিঙ্গ বা স্ত্রী লিঙ্গের কোন বর্ণনা নাই। পুরুষ এবং স্ত্রীলোক ক্রীতদাস, হত্যাকারী, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হতে পারে। তাছাড়া মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সকল সুস্বাস্থের অধিকারী সহ শারীরিক অক্ষমতা বিকলঙ্গতা, অঙ্গহানী, প্রতিবন্ধি এবং তৃতীয় লিঙ্গকে উত্তরাধিকারত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। কেবলমাত্র মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে যৌন-অক্ষম ব্যক্তিকে বিবাহ করা হতে নিষেধ বা নিবৃত্ত করা হয়েছে।
যেসব হিজড়ার মাঝে পুরুষালি স্বভাবের প্রাধান্য থাকে তাদেরকে পুরুষ আর যাদের মাঝে নারী স্বভাবের প্রাধান্য তাদেরকে নারী হিসেবে বিবেচনা করে সম্পত্তি বণ্টনের বিধান দিয়েছে ইসলাম। আর যেসব হিজড়ার মাঝে নারী-পুরুষ উভয় বৈশিষ্ট্যই সমভাবে বিদ্যমান, তাদেরকে নারী হিসেবে সম্পত্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে ইসলাম।
লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। Email:seraj.pramanik@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১৬-৮৫৬৭২৮